ঝগড়ার জের ধরে স্ত্রীকে একতরফা তালাক দেন স্বামী রহম আলী দেওয়ান (৫০)। প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ের আয়োজনও করেন তিনি। তবে এতে বাধ সেধেছেন প্রথম স্ত্রী। তিনি স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে ঠেকাতে গত চার দির ধরে শ্বশুরবাড়িতে অনশন করে যাচ্ছেন।

গত ১৭ জানুয়ারি হরিরামপুর উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের ঝিটকা উজানপাড়ায় মধ্য রাতে একই গ্রামের এক মেয়ের সঙ্গে রহম আলীর দ্বিতীয় বিয়ের আয়োজন করা হয়। তবে সেখানে হাজির হন প্রথম স্ত্রী। পরে বিয়ে পণ্ড হলে ওই রাতেই রহম আলীর বাড়িতে অনশনে বসেন ওই গৃহবধূ।

খবর পেয়ে ২০ জানুয়ারি রাতে হরিরামপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

সংসার জীবনে রহম আলী দেওয়ান তিন কন্যা সন্তানের জনক। বড় দুই মেয়ের বিয়ে হলেও ছোট মেয়ে বর্তমান স্থানীয় ভাদিয়াখোলা ফিরোজা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।

ভুক্তভোগীর নারীর অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক কোলহের জের ধরে গত বছরের ২০ এপ্রিল গোপনে একতরফাভাবে স্ত্রীকে তালাক দেন রহম আলী দেওয়ান। তালাকের কপি ওই গৃহবধূর হাতে পৌঁছালে তালাকের বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে আইনগতভাবে তালাকটি সম্পন্ন না হওয়ায় গত বছরের ৬মে পুনরায় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে তালাক নোটিশ পাঠান স্বামী রহম আলী।

কিন্তু তালাক নোটিশটি গ্রহণ না করে ওই গৃহবধূ এলাকার লোকজনকে বিষয়টি মিমাংসার জন্য অবহিত করেন। কিন্তু বিভিন্নভাবে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করলেও একটি মহলের কারণে তা সম্ভব হয়নি। ফলে উভয় পক্ষই পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করে।

এরই মধ্যে এলাকার কয়েকজন সমাজপতির প্ররোচণায় গত ১৭ জানুয়ারি মধ্যরাতে একই গ্রামের এক মেয়ের সঙ্গে রহম আলীর দ্বিতীয় বিয়ের আয়োজন কো হয়। সেখানে হাজির হন ওই গৃহবধূ। পরে বিয়ে পণ্ড হলে ওই দিন রাতেই রহম আলীর বাড়ি অনশনে বসেন ওই গৃহবধূ।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানান, আমি আমার স্বামীর সংসার করতে চাই। আর্থিক বিষয় দেখিয়ে একতরফাভাবে আমাকে তালাক দিয়েছেন। এলাকার কয়েকজন মাতবর বিষয়টি সমাধানে গরিমশি করছেন। মূলত তাদের কারণেই আমাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি হয়। এখন তারা দ্বিতীয় বিয়ে করানোর জন্য আমার স্বামীর পেছনে লেগেছে। বিয়ের খবর পেয়েই আমি ওই বাড়িতে যাই।

তিনি আরও বলেন, সেখানে সমাজের প্রভাবশালী আব্দুর রব, ইয়াকুব আলী, হাসমত আলীসহ আরও অনেকেই ছিল। তারাই আমার স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে করানোর জন্য নিয়ে গেছেন। আমি যাওয়ার পরে বিয়ে বন্ধ করে আমার স্বামীকে ফেলে তারা সবাই পালিয়ে যান। পরে আমি আমার শ্বশুরবাড়ি এসে বসি।

প্রতিবেশী ফরমান আলী জানান, টাকা পয়সা নিয়ে ওই গৃহবধূ ও স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য চলছে। রহম আলী দীর্ঘদিন বিদেশে ছিল। তার স্ত্রী নাকি স্বামীর টাকা নষ্ট করেছে। তবে মেয়েদের চলাফেরা ভালো ছিল না। মেয়েদের কারণেই তার এই দুরাবস্থা।

এ ব্যাপারে স্বামী রহম আলী দেওয়ানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে হরিরামপুর থানার ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলাম জানান, অনশনের ঘটনার খবর পেয়ে তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুতই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 কলমকথা/রোজ